কুরবানি

কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত?

কোরবানির পশুর বৈশিষ্ট্য

সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করে পশু কিনে তা আল্লাহর পথে জবাই করার নামই কোরবানি। জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে কোরবানি করতে হয়।

কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু অনুমোদন করে সেগুলো দিয়ে। যেমন—উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম’ অর্থাৎ ‘অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু’। এই ছয় প্রকার পশু ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না।

কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স এক বছর হতে হবে। আর গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। দুম্বার এক বছর পূর্ণ না হলেও যদি এক বছরের মতো হৃষ্টপুষ্ট হয় তাহলে কোরবানি করা যাবে। উল্লিখিত পশুগুলো নর, মাদি বা বন্ধ্যা যা-ই হোক তা দ্বারা কোরবানি শুদ্ধ হবে।

আবু যাহহাক উবায়দ ইবন ফায়রুজ (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বারা (রা.)-কে বললাম, যে সকল পশু কোরবানি করতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) (খুতবা দিতে) দাঁড়ালেন আর আমার হাত তাঁর হাত অপেক্ষা ছোট। তিনি বললেন, চার প্রকার পশু কোরবানি বৈধ নয়, কানা পশু যার কানা হওয়াটা সুস্পষ্ট, রুগ্ণ পশু যার রোগ সুস্পষ্ট, খোঁড়া পশু যার খোঁড়া হওয়া সুস্পষ্ট; দুর্বল, যার হাড়ে মজ্জা নেই। আমি বললাম, আমি শিং ও দাঁতে ত্রুটি থাকাও পছন্দ করি না। তিনি বলেন, তুমি যা অপছন্দ করো, তা ত্যাগ করো; কিন্তু অন্য লোকের জন্য তা হারাম কোরো না। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৭০)

আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান উত্তমরূপে দেখে নিই। আর আমরা যেন কানের অগ্রভাগ কাটা, কানের পেছন দিক কাটা, লেজ কাটা এবং কানের গোড়া থেকে কাটা পশু কোরবানি না করি। (নাসায়ি, হাদিস : ৪৩৭৩)

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষত্রুটিমুক্ত হওয়া উত্তম। কোনো খুঁত থাকলে সে পশু কোরবানি করা উচিত নয়। যে পশুতে এমন কোনো খুঁত বা অপূর্ণতা রয়েছে যার কারণে এটির উপযোগিতা কমে যায় ও মূল্য হ্রাস পায়, তেমন পশু করবানি করা যাবে না। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যাবে। উট, গরু, মহিষ এগুলোর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button